পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০১৯ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

গারো সাম্প্রদায়ের আত্নীয় সম্পর্ক পদ্ধতি (গারোদের উৎপত্তি, সমাজ ব্যবস্থা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, বিবাহ প্রথা ও মাতৃসূত্রীয় প্রথা - ৩য় পর্ব)

ছবি
প্রতিটি সমাজের আত্নীয় সম্পর্ক হলো একটি স্বাতন্ত্র উপাদান । এটি একটি সম্প্রদায়ের সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ন  ভূমিকা পালন ও গ্রহন করে । আদিবাসী সম্প্রদায়ের সমাজগুলি নিজস্ব একটি আত্নীয়তা সম্পর্ক সিস্টেম দিয়ে চিহ্নিত করা হয় । গারো সমাজের সাম্প্রদায়িক আত্নীয় সম্পর্ক নিম্নরুপঃ গারো সম্প্রদায়ের সমাজে একটি গুরুত্বপুর্ন অংশ হলো আত্নীয়তা সমপর্ক যা বংশের মাধ্যেমে সম্পর্কযুক্ত । গারো সমাজে ৫টি বংশজাত গোত্র রয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে  । এই বংশকে গারো ভাষায় বলে চাচ্চি । এই ৫টি চাচ্চি হলো সাংমা, মারাক, মমিন, আরেং এবং শির । প্রতিটি বংশের আরো উপশাখা বা উপবংশ রয়েছে । এই উপশাখাকে বলা হয় মা-চং । চাচ্চি অর্থ হলো একজন আরেকজনের সাথে আত্নীয় বা রক্ত সম্পর্ক যেখানে মাচং হলো একজন মায়ের বংশজাত উত্তরাধিকারীগন । মা হলো মা বা মাদার, চং হলো দল, চাচ্চি হলো বংশ/ক্লান এবং মাচং হলো উপবংশ/সাবক্লান । প্রকৃতপক্ষে তাদের মূলত দুই ভাগই ছিল বলে ধারনা করা হয় । সেটি হলো সাংমা মাচং এবং মারাক মাচং । আরেং, সিরা ও মমিন ঐ দুইয়ের মধ্যেই অন্তভুৃক্ত । আরেং বংশটি সাংমা থেকে এবং সিরা বংশ মারাক হতে উদ্ভব হয়েছে বলা হয়ে থাকে । তৃতীয় যে বং

গারো জনগোষ্ঠীর মাইগ্রেশন /অভিবাসন ও বসতি স্থাপন- (গারোদের উৎপত্তি, সমাজ ব্যবস্থা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, বিবাহ প্রথা ও মাতৃসূত্রীয় প্রথা - ২য় পর্ব)

ছবি
যদিও অভিবাসন সংক্রান্ত তারিখ ও কারনসমুহ সহ তেমন কোন যথাযথ প্রমানযোগ্য উৎস তথ্য উপাত্ত নেই তবুও গারো জনগোষ্ঠীর বিশ্লেষক ও গবেষকরা গারোদের বিশ্বাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, লোককাহিনী ও কিছু ঐতিহাসিক ঘটনার তথ্য থেকে অনুমান ও ধারনা করে গারোদের অভিবাসন ও বসতি স্থাপন সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপন করেছেন।  এ সম্পর্কে প্লে ফেয়ার লিখেছেন যে, গারোদের তিব্বত থেকে কিভাবে সমতল থেকে পথব্রজে আগমন হয়েছে মেঘালয়ে, ব্রম্মপুত্র উপতক্যা থেকে কিভাবে হিমালয়ে আগমন ঘটেছে , এখন বর্তমানে যেখানে গারোরা বসতি স্থাপন করেছে সেখানে আসার তেমন কোন সুস্পষ্ট ও স্বতন্ত্র গল্প নেই বলে উল্লেখ করেন । বেশীরভাগ লোককাহিনী ও লোকগীতির মধ্যে তিব্বত সম্পর্কে অনেকবার উল্লেখ করা রয়েছে যা তিব্বত থেকে তাদের বসতি স্থানান্তর হয়েছে বলে কাহিনী রচিত রয়েছে । যেখানে তাদের বসতি ছিল সেখান থেকে তারা স্থনান্তরিত হয়েছে এই ঘটনা স্পষ্ট । এটি একটি উল্লেখযোগ্য কাহিনী যে, তাদের আসাম উপতক্যা থেকে তিব্বতে যে অবিভাসনের ঐতিহ্য  ও ইতিহাস রয়েছে এবং তা বর্তমানের গারো জনগোষ্ঠী মনে প্রানে তা  বিশ্বাস করে । এইচ কে বার পুজারি লিখেছেন যে, আমাদের কোন জনপ্রিয় ঐতিহ্য বা ইতিহ

গারো শব্দের উৎপত্তি ও বিভিন্ন মতবাদ (গারোদের উৎপত্তি, সমাজ ব্যবস্থা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, বিবাহ প্রথা ও মাতৃসূত্রীয় প্রথা -১ম পর্ব)

ছবি
গারো আদিবাসি শিশু  গারো জাতি মূলত উত্তর পূর্ব ভারতের বাসিন্দা, বিশেষ করে মেঘালয় রাজ্যের গারো পাহাড়কে ঘিরেই তাদের বসবাস । যাই হোক, এই জাতি গোষ্ঠীর কয়েকটি আবার শাখা প্রশাখা বা উপগোষ্ঠী রয়েছে যা অন্যান্য এলাকাতে বিক্ষিপ্ত ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করে থাকে । আসামের প্রতিবেশী রাজ্য, অন্যান্য উত্তর-পূর্ব রাজ্য, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাতে গারো আদিবাসীর বসবাস পরিলক্ষিত হয় । এই এলাকার ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা বা পার্থক্যের কারণে, গারো জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায় বা গোত্র ভারতের মেঘালয়ের সমগ্র অঞ্চলেই বিস্তৃতি লাভ করে । মূলত এই গবেষনায় মেঘালয় রাজ্যে ও তার আশপাশে বসবাসকারী গারোদের সামাজিক ব্যবস্থা সম্পর্কেই তুলে ধরা হয়েছে । “গারো”  কেন বলা হয়? “গারো” নামের অর্থ কি? “গারো” শব্দ দিয়ে কি বুঝানো হয়? এ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মতবাদ, মতর্পাথক্য বা মতভেদ রয়েছে যা আমরা বিভিন্ন গবেষকদের আলোচনা ও বর্ননা থেকে জানতে পারি  । ১) ভারতের এক মেজর প্লেফেয়ার তার  “দ্যা গারোস” নামক গবেষনা মূলক একটি বই এ উল্লেখ করেন যে,  প্রথমে “গারো” শব্দটি “গারা” বা “গাঞ্চিং”  গারো পাহাড়ের দক্ষিনদিকে যে জনগোষ্ঠী বা উপ

গারোদের উৎপত্তি, সমাজ ব্যবস্থা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, বিবাহ প্রথা ও মাতৃসূত্রীয় প্রথা

ছবি
মেঘালয় এর ম্যাপ বাংলাদেশ এবং ভারতের মেঘালয়ে মূলত গারো আদিবাসীদের বসবাস । নিজে গারো আদিবাসী তাই গারো আদিবাসী নিয়ে জানার একটি কৌতুহল থেকে গারো সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার ও জানার একটা আগ্রহ তৈরী হয় । আর এ কৌতুহল থেকেই কিছু কিছু বই সংগ্রহ করে পড়ার সময় লক্ষ্য করলাম গারোদের যে ইতিহাস তা ভিন্নরকম এবং খুবই বিচিত্র ও অনেক সমৃদ্ধ মনে হয়েছে আমার কাছে । গারোদের জীবন যাত্রা, চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য , সামাজিক জীবন, আচার, রীতি, প্রথা সবকিছুর মধ্যে অন্যরকম বৈচিত্রতা রয়েছে যা ভিন্নরকম ও আর্কষনীয় । প্রাতিষ্ঠানিক কোন বইয়ে গারো সম্পর্কে বিস্তারিত তেমন কোন লেখা পাওয়া যায়না । প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বইয়ে গারো সম্পর্কে যে কয়েক লাইন পাওয়া যায় তা অনেক ক্ষেত্রেই গারোদের বাস্তব জীবন চিত্রের সাথে মিলেনা বললেই চলে এবং অল্প কয়েক লাইন মাত্র । নিজের কাছেই বইগুলো পড়তে পড়তে গারোদের অন্তত নিজের আদি ইতিহাস, উৎপত্তি এবং সামাজিক রীতি নীতি, দলগত বৈচিত্রতা, গোত্রগত বিভিন্ন নিয়ম কানুন কেমন ছিল, নিজের শিকড় কোথায় হতে পারে এ সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব রয়েছে বলে আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি । বর্তমান যুগে শ